মাহফুজা আক্তার মিষ্টি'র পাঠ প্রতিক্রিয়া
০১. অক্ষয় মালবেরি
- মণীন্দ্র গুপ্ত
নিজের তৈরি ক্যাডিলোস্কোপে নিজের জীবন দেখেছেন যিনি, তিনি মণীন্দ্র গুপ্ত। নিজের জীবনকে বনের নরম সবুজের মতো ছায়াজড়ানো, মায়াঘেরা ভাষায় বর্ণনা করে গেছেন। আপাত বাস্তবতাকেই তিনি দেখেছেন অন্যচোখে। গাছ,পাখি, নিস্তব্ধ অলস দুপুরের বিরতিহীন ডেকে চলা ঝিঁঝিঁপোকা, অলস ঘুঘুরডাক, বসন্তবৌরির এ গাছ থেকে ওগাছে উড়ে বেড়ানো, আমের মুকুলের সুবাস, শান্ত কাকচক্ষু জলে কচুরিপানা, বনের গহীন হাঁটাপথ সব মিলিয়ে এক অন্য জগতে ডুব দেয়া।
তাইতো আনন্দবাজার পত্রিকা এর সম্বন্ধে বলেছে - "প্রচলিত আত্মজীবনী নয়, উপন্যাস নয়, একজন দুঃখী-না সুখী -না মানুষের চিহ্নপত্র।"
"অক্ষয় মালবেরি" এক অক্ষয় স্মৃতিকথা, সুন্দরে মায়ায় জড়ানো এক অমূল্যসম্ভার। এইখানে এই বাগানবিলাসের ছায়ায় বসে, পাখির গান শুনে আর আমের মুকুলের সুবাস মাখিয়ে এই মায়াময় বইটা পড়া পরম শান্তির।
"এই উদাসী হাওয়ার পথে পথে মুকুলগুলি ঝরে
আমি কুড়িয়ে নিয়েছি, তোমার চরণে দিয়েছি
লহো লহো করুণ করে।"
বইয়ের কথাগুলিও যেনো এই ঝরা মুকুলের মতো। একে একে কুড়িয়ে নিয়ে মালা গাঁথবার পালা পাঠকদের।
বইঃ অক্ষয় মালবেরি
মণীন্দ্র গুপ্ত
অবভাস প্রকাশনী
০২. জাপান কাহিনি
- আশির আহমেদ
আশির আহমেদ স্যারকে ফেসবুকে ফলো করার সুবাদে উনার বেশ কিছু লিখা পড়বার সুযোগ হয়েছে। তারই সূত্র ধরে এবারে ভাবলাম উনার লিখা বই পড়া যাক। জাপান কাহিনি প্রথম খন্ড মুদ্রিত আকারে প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে। বইটিতে ২১টি ছোটো ছোটো গল্প আছে। এগুলোকে গল্প না বলে বাস্তব ঘটনা বলা যায়৷ স্যারের ভাষ্যমতে বইয়ের সবগুলো কাহিনিই সত্য ঘটনা নিয়ে লিখা।
এদিকে বইমেলায় জাপান কাহিনির অষ্টম খন্ড পাওয়া যাচ্ছে। নতুন দেশ, নতুন জায়গা বা ট্রাভেল স্টোরি বরাবরই আমার খুব ভালো লাগে পড়তে।
সবগুলো ঘটনাই এতো সরল আর প্রাঞ্জল ভাষায় লিখা! বইটির ভূমিকায় স্যার আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ তার চিরায়ত সুন্দর লেখনীতে বইটাকে আরো সুশোভিত করে তুলেছেন।
পুরো বইটায় বেশ কিছু জাপানি শব্দ আছে বাংলা অর্থসহ। এই প্রথম আশির স্যারের একটা লিখা পড়েই আমি হ্যালো(Konnichiwa), থ্যাংকইউ (Arigatou) আর সরি (Gomennasai) যে জাপানে কতো গুরুত্বপূর্ণ শব্দ তা শিখেছিলাম। এবং তা পুরো জীবনেই গুরুত্বপূর্ণ তা প্রতিনিয়ত তো জানছিই!
সামাজিক শিক্ষা নামক ঘটনাটায় জাপানি সম্রাট হিরোহিতোর ঘটনাটা এ যেনো ট্রাকবাহনে ম্যাকমাহনে তে পাওয়া "দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানিরা তাদের অসম্ভব ভালো ব্যাবহারের কারণে মণিপুরীদের মন জয় করে নেয়া" এই অংশটুকুর মতো।
মাত্র ৯৩ পৃষ্ঠার সুখপাঠ্য বইটা পড়তে দু'ঘটার বেশি সময় লাগবে না। দুপুরে ভাতঘুমের বদলে চমৎকার এই বইটা পড়ে একরাশ ভালোলাগা নিয়ে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে বসে থাকলেন আর মনে মনে ভাবলেন, আহা! বই কি এক সুন্দর ব্যপার! যেকোনো সময় চাইলেই টাইম ট্রাভেল করা যায়। অথবা, যাদের জানিনা-চিনিনা তাদের সাথেও কতোসুন্দরভাবে তাদের গল্পের অংশ হওয়া যায়।
০৩. আমাজনিয়া
- জেমস রোলিন্স
(অনুবাদ- রাকিব হাসান)
বইয়ের পাতায় পাতায় আমাজনের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য আর রহস্যময়তা।আমাজনের ইমানোমামা ইন্ডিয়ান গোত্র,প্রায় হারিয়ে যাওয়া এবং রহস্যময় ব্যান-আলি গোত্র,প্রায় অনাবিষ্কৃত প্রাণী এবং উদ্ভিদজগত।আর প্যালিজোয়িক যুগের গাছপালা যেসব অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে ভাবা হতো সেসব কি করে এখনো টিকে আছে ব্যান-আলিদের রহস্যময় গ্রামে!
গল্পের শুরু হয় চারবছর আগে রহস্যময় ভাবে হারিয়ে যাওয়া একদল বিজ্ঞানীদের একজন ফিরে আসায়। যিনি ফিরে আসার পরপরই অজানা এক রোগে মারা যান এবং রোগটি নানাভাবে কিছুদিনের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে আমাজন থেকে শুরু করে ব্রাজিল হয়ে প্রায় পুরো আমেরিকায়!
হারিয়ে যাওয়া বিজ্ঞানীদলকে আবার ফিরে পাওয়ার নতুন আশার আলো দেখা যায়!
শুরু হয় তাদের হারিয়ে যাওয়ার রহস্য উন্মোচনের এবং একইসাথে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী রহস্যময় রোগের নিরাময় খুঁজে বের করার যাত্রা।
কঠিন এবং এ দুঃসাহসী যাত্রার পদে পদে উৎপেতে থাকা সকল বিপদ কাটিয়ে উঠে শেষ পর্যন্ত অভিযাত্রী দল কি তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারে?
কি ঘটে সেই হারিয়ে যাওয়া লোকগুলোর ভাগ্যে?
আর কি সেই রহস্যময় রোগ যার সংস্পর্শে আসলেই সবাই আক্রান্ত হচ্ছে?
জানতে হলে পড়তে হবে এই রোমাঞ্চকর বইটি।
০৪. ঘরের মধ্যে ঘর
- শংকর
কোলকাতার বিখ্যাত সাজাহান হোটেলের এসিস্টেন্ট রিসেপশনিস্ট শংকর বাবু হঠাৎ চাকরি হারিয়ে বেকায়দায় পড়ে যান। নানান অবস্থা পেরিয়ে শুভানুধ্যায়ী গণপতি সরকারের চেষ্টায় স্যাডার স্ট্রিটের(সদর স্ট্রিট) সাহেব পাড়ার থ্যাকারে ম্যানশনের ম্যানেজারবাবু হিসেবে অভিষিক্ত হন।
বাড়িটির নাম বিখ্যাত রাইটার উইলিয়াম মেকপিস থ্যাকারের নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে।(তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য বই "ভ্যানিটি ফেয়ার")। কালক্রমে যা লোকের মুখে মুখে বিকৃত হয়ে ঠাকরে ম্যানশনে পরিণত হয়েছে।
সাড়ে একাত্তর টি ভাড়াটের সমাহার এই ম্যানশন। ৬৯৩ পৃষ্ঠার সুদীর্ঘ এই উপন্যাসের পাতায় পাতায় জড়িয়ে আছে বিচিত্র কিছু মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখ, গ্লানি,ভালোবাসার,প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি,স্নেহ-মমতার গল্প।
বই থেকে পাওয়া প্রিয় কিছু উক্তি -
★অভিজ্ঞতা নিয়ে পৃথিবীতে কেউ জন্মায় না।জন্মাবার সময় ভগবান একজোড়া চোখ,একজোড়া কান আর একখানা মাথা দেন তা খাটয়ে অভিজ্ঞতা জমিয়ে নিতে হয়।
★ঘরের মধ্যে ঘর
নাচে কন্যে-বর।
★পৃথিবীর অন্য যেকোনো আনন্দের জন্যই কিছু খরচের প্রয়োজন। কিন্তু পকেটে একটি পয়সা না থাকলেও বড় বড় শহরে এখনো বিনামূল্যে বই পড়ার আনন্দ উপভোগ করা যায়।
★এই আমাদের মুশকিল।পৃথিবীর কিছু অভাগা ও অভাগিনীকে সবসময় সময়ের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়-তাদের দৈনন্দিন কর্মধারায় সব সময় 'আর্জেন্ট'- এর রবার স্ট্যাম্প পড়ছে।নিজের ইচ্ছেমতো, সময়মতো খেয়ালখুশির খাতা ভরানোর সময় তাদের জীবনে কখনও আসে না!
★যেখানেই মানুষ, সেখানেই নাটক।জীবনদেবতা রক্ত-মাংসের চরিত্র নিয়ে প্রতিটি ফ্ল্যাটে দিনের পর দিন নিজের খেয়ালে একের পিএ এক দৃশ্য উপস্থাপিত করে চলেছেন। অলিখিত সেই সব নাটক যদি কোনো সংগ্রহ-শালায় সঞ্চিত হয়ে থাকতো, তাহলে মানব-চরিতের আরও কতো আশ্চর্য দিক আরো কতো সহজে আমাদের চোখের সামনে উদঘাটিত হতো!
★দ্যা ওয়ার্ল্ড লাভস দি লাভার।
০৫. হাঁসুলী বাঁকের উপকথা
- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
উপন্যাসটির উৎসর্গের পাতায় লেখা-
পরম শ্রদ্ধেয়
কবি কালিদাস রায়
শ্রদ্ধাস্পদেষু
দাদা,
রাঢ়ের "হাঁসুলী বাঁকের উপকথা " আপনার অজানা নয়। সেখানকার মাটি, মানুষ, তাদের অপভ্রংশ ভাষা-সবই আপনার সুপরিচিত।তাদের প্রাণের ভোমরা-ভোমরীর কালো রঙ ও গুঞ্জন আপনার পল্লীজীবনের ছবি ও গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।এই মানুষদের কথা শিক্ষিত সমাজের কাছে কেমন লাগবে জানিনা। তুলে দিলাম আপনার হাতে।
ইতি _____
তারাশঙ্কর।
এই হলো রাঢ় দেশের হাঁসুলী বাঁকের কাহারদের উপকথার মুখবন্ধ।
উপন্যাস:হাঁসুলী বাঁকের উপকথা।
লেখক:তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশকাল:১৯৪৬ সাল
কোপাই নদীর প্রায় মাঝামাঝি বিখ্যাত এক বাঁকের নাম হাঁসুলী বাঁক।ভরা বর্ষায় যখন চারদিক সবুজ-শ্যামল এবং পানিতে টইটম্বুর হয়ে উঠে তখন জলভরা বাঁক দেখে মনে হয় এক কিশোরী শ্যামলা মেয়ের গলায় সোনার হাঁসুলি।আর অগ্রহায়ণে যখন জল পরিষ্কার সাদা হয়ে উঠে তখন মনে হয় রূপোর হাঁসুলী।তাই এর নাম হয়েছে হাঁসুলী বাঁক।
এই বাঁকের অদূরেই বাঁশবাঁদি গ্রাম।এ গ্রামে গোটা তিরিশেক ঘর কাহারদের বাস।কাহারেরা দুটি পাড়ায় বিভক্ত। বেহারা পাড়া এবং আটপৌরে পাড়া। বেহারা পাড়ার লোকেরা পালকি বহন করে। আর আটপৌরেরা চাষ বাসের কাজে নিযুক্ত।
দিনকয়েক থেকে এই নদীর কিনারা,জঙ্গলের দিক থেকে শিসের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।কিন্তু,কেউ এর কোনো কূল পাচ্ছেনা।
এভাবেই মূল ঘটনার শুরু।
ঔপন্যাসিক কাহারদের জীবনে ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটি ঘটনাকে শৈল্পিক কাঠামোতে দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছেন।পুরো উপন্যাস জুড়ে কাহারদের জীবনযাপনের উত্থানপতন,দুঃখ-শোক, জীবনের ভাঙাগড়ার বিস্তারিত চিত্র অতি সূক্ষ্ম-সুচারুভাবে এবং নান্দনিক শব্দচয়নের মাধ্যমে কাহারদের ভাষায় তুলে ধরেছেন।খুবই সাধারণ মানুষকে সাহিত্যের কেন্দ্রবিন্দু করে যিনি প্রথম উপন্যাস রচনায় সাহস দেখিয়েছেন তিনি তারাশঙ্কর। উচ্চবর্ণের উত্তিরীয় গায়ে জড়িয়ে জন্মগ্রহণ করলেও নিম্নস্তরের সবহারাদের ছেঁড়া আঁচলের তলে যে জীর্ণ জীবন, যে সুখ-দুঃখের কাহিনি সুচাঁদ বুড়ি শোনায়, তা পরম মমতায় তুলে আনতে সমর্থ হয়েছেন তারাশঙ্কর।
ভারতীয় উপমহাদেশে যুগ যুগ ধরে চলে এসেছে জাতিভেদ প্রথা।ঔপন্যাসিক তাঁর শৈল্পিক মননের দ্বারা তুলে ধরেছেন জাতিভেদ প্রথার ভয়ংকর চিত্র।জমিদার, মহাজন, ভূস্বামী কর্তৃক চাষিদের উপর জুলুমের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে উপন্যাসে।
উপন্যাসটির বড় নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে কাহারদের ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাস। সুচাঁদ পিসির গোঁড়ামি এবং বনওয়ারীর আধুনিকতা বর্জন উপন্যাসে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
নানারকমের চরিত্রের সমাহার ঘটেছে এখানে।বয়সের ভারে নুয়ে পড়া সুচাঁদ, তার মেয়ে বসন অর্থাৎ বসন্ত, পাখী, করালী, কাহার সর্দার বনোয়ারী, কালোশশী, পরম, পানু, প্রহলাদ, নয়ন, সুবাসী, নসুবালা, পাগল।
এর মধ্যে বনোয়ারী আর করালী চরিত্র সবচেয়ে মূখ্য।
বনোয়ারী স্থিতধী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, প্রাচীন সংস্কারপন্থী।
কিন্তু করালী চরিত্র টি ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহনকারী।
আমার বনোয়ারী চরিত্রটির উপর একধরণের মায়া জন্মেছে।
নারী চরিত্র নির্মাণেও ঔপন্যাসিকের বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। হাঁসুলী বাঁকের মেয়েরা স্বাধীনচেতা, প্রেম-ভালবাসার ক্ষেত্রে কেউ তাদের বাঁধা দিতে পারেনি। মেয়ে-পুরুষের ভালোবাসা হলে ওরা বলে- "অঙ লাগায়েছে দু'জনাতে!"
অনেকেরই অন্যের হাত ধরে চলে যাওয়ার ইতিহাস আছে।
তেমনি এক দুরন্ত, স্বাধীনচেতা নারী বসন্তের মেয়ে পাখি।নিজের ইচ্ছায় সে হাপানি রুগী নয়নকে ছেড়ে করালীর সাথে ঘর বাঁধে।
সেই করালী সুবাসীকে নিয়ে পালিয়ে গেলে তা ও সে সহ্য করতে পারেনি। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
বিশ্বজুড়ে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যায়।
হাঁসুলী বাঁকে ও যুদ্ধের ক্যাম্প বসে। যুদ্ধের প্রয়োজনে উজার হয়ে যায় বাঁশবাঁদির বাঁশ।
প্রবল বান এসে ভাসিয়ে দিয়ে যায় হাঁসুলী বাঁক। ভূমিসাৎ করে দিয়ে যায় গোটা কাহারপাড়া।
করালী আবার হাঁসুলী বাঁকে ফেরে, নিজ হাতে বালি কেটে আবিষ্কার করে এক নতুন হাঁসুলী বাঁক।
পুরো বই পড়তে পড়তে কখন যে আপনি নিজের অলক্ষ্যে কাহারদের সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, কান্না, উৎসবের আমেজের সাথে একাত্ব হয়ে তাদের জীবনযাত্রাকে ভালোবেসে ফেলবেন ! টেরই পাবেন না।
পাগলের বাঁধা একটি গান দিয়েই শেষ করি-
হাঁসুলী বাঁকের কথা - বলবো কারে হায়!
কোপাই নদীর জলে - কথা ভেসে যায়!
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url